শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

লালমনিরহাটে মিষ্টি কুমড়া চাষে পাল্টে গেছে কৃষকের ভাগ্য

লালমনিরহাট প্রতিনিধি::
লালমনিরহাটে এবার দুই শতাধিক হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তা, সানিয়াজান ও ধরলা নদীর চর অঞ্চলের পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গ্রাম গুলোতেও মিষ্টি কুমড়া চাষ করে বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য।
জানা গেছে, লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তর এ বছর জেলায় রবি মৌসুমে ৭০ হেক্টর ও খরিফ-১ মৌসুমে ৩৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করলেও তা ছাড়িয়ে প্রায় ২ শত হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষাবাদ হয়েছে। ফলে জেলার দিগন্তজুড়ে মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতের সমারোহের পাশাপাশি বাম্পার ফলনে কৃষকরা বেশ খুশি। এ অঞ্চলের অর্থকারী ফসল ধান, ভুট্টা ও তামাক চাষের ওপর নির্ভরশীল কৃষকের জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল পরিবর্তন। জেলার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানি হচ্ছে। উর্বর বেলে-দোআঁশ মাটির কারণে জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন নদীর চর অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে ধানের চেয়ে রবি শস্য ও সবজি আবাদ বেশি হচ্ছে। জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার চর ও সীমান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক ভাবে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলার মিষ্টি কুমড়া ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে রবিশস্যের অন্যতম সবজি মিষ্টি কুমড়া।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামের মিষ্টি কুমড়া চাষি আইয়ুব আলী জানান, এবার তিনি ১৩ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। তিনি আশা করছেন সব কিছু ঠিক থাকলে এবার অন্তত ৩ লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারবেন। এ ছাড়াও হাতীবান্ধা উপজেলার সির্ন্দুনা ইউনিয়নে মিষ্টি কুমড়া চাষে যারা লাভবান হয়েছেন তাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম, জাকির মোল্লা, এলাহী বকসের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণায় তারা কুমড়া আবাদ করে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন। পাশাপাশি বিক্রিতেও তেমন কোনো ঝামেলা নেই।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খবির উদ্দিন জানান, তিস্তা নদীতে আমার ঘর-বাড়িসহ সব তলিয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। ঠিক সেই সময় পাশ^বর্তী কয়েক জনের কুমড়া চাষ দেখে আমিও তিস্তার চরে কুমড়া আবাদ করি। কুমড়ার ফলনও ভাল হয়েছে। ঠিক মত বাজার জাত করে বিক্রয় করতে পারলে কয়েক গুন লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি জানান।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, এ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভবান হয়েছেন অনেক কৃষক।
লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ রায় জানান, জেলার ৫টি উপজেলার চর অঞ্চল গুলোতে অনেক জমি পতিত পড়ে থাকে। সেই জমি গুলোতে মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ করে জেলার শত শত কৃষক তাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে। এসব কৃষকের সাফল্য দেখে আগামীতে আরও অনেক কৃষক কৃমড়া চাষে আগওহী হবে বলে তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com